রাজনীতি

[রাজনীতি][twocolumns]

আন্তর্জাতিক

[আন্তর্জাতিক][bleft]

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

[বিজ্ঞান-প্রযুক্তি][bsummary]

নতুন দল গড়তে চান জিয়ার ভাই

ঢাকা : নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই আহমেদ কামাল। তবে কবে নাগাদ নতুন এ দল গঠন করা হবে সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি। দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় আরো এক বছর সময় লাগতে পারে এবং এটির নাম ‘ন্যাশনালিস্ট পার্টি’ হবে বলে জানান আহমেদ কামাল। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব জানান আহমেদ কামাল। ‘শহীদ জিয়া ও জাতীয়তাবাদী আদর্শ বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে। আহমেদ কামাল এ সংগঠনের উপদেষ্টা। ‘আপনি কোনো রাজনৈতিক দল করবেন কি না- জানতে চাইলে জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই আহমেদ কামাল বলেন, ‘আমি নতুন দল করব। সে জন্যই তো এসেছি। তবে টাইম পরে জানাব। যখন করব তখন আপনাদের (সাংবাদিক) ডাকব।’ আগামী ১৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি করি না। আমি নতুন দল করবো। এর নাম হবে ‘ন্যাশনালিস্ট পার্টি।’ এর আগে, ‘শহীদ জিয়ার আদর্শ ও বিপন্ন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’-শীর্ষক ওই আলোচনা সভার সভাপতি হিসেবে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আহমেদ কামাল। বিএনপি চরম দুর্দিন অতিক্রম করছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে সাবেক প্রেসিডেন্টের ছোট ভাই আহমেদ কামাল বলেন, ‘বিএনপির বর্তমান নাজুক অবস্থা দেখে কিছু কথা না বলে পারছি না। মাঝে মাঝে দুঃখ হয় যখন দেখি, আমার ভাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ-নীতির সঙ্গে বিএনপির অনেক কর্মকাণ্ডের এখন মিল নেই। মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে এখন বিতর্ক সৃষ্টি করা মোটেই সঠিক নয় বলে আমি মনে করি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। একে অপরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি ও নোংরা রাজনীতি থেকে সব দলকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিএনপির নেতৃত্ব এবং বিএনপির চেয়ারপারসনকে ভুল পথে পরিচালিত করার অপচেষ্টা করছে। তারা চেয়ারপারসনকে ভুল পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে অন্ধকারে রাখতে চান। এ চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী দলের ত্যাগী ও প্রবীণ নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতা কর্মীদের মাশুল দিতে হচ্ছে। শত শত মিথ্যা মামলা নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। গ্রেপ্তার, হত্যা, গুম হওয়ার ভয়ে যাযাবর জীবনযাপন করছে। এসব ত্যাগী নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং তাদের মধ্যে যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে আবার সঠিক নির্দেশনা দিয়ে তাদের পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। সভায় রাজনীতিতে আসার আগ্রহের কথা জানিয়ে জিয়ার ছোট ভাই বলেন, ‘আমার ভাইয়ের হাতে গড়া সংগঠন বিএনপির এই দুর্দিনে তার আদর্শ বাস্তবায়ন এবং দলকে সঠিক পথে সুসংগঠিত করার জন্য একজন সহযোদ্ধা হিসেবে আপনাদের পাশে আছি, থাকব। আমি ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করতে চাই না। দুর্দিনে বিএনপির পাশে থেকে সেবা করতে চাই।’ লিখিত বক্তব্যে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু দেশের কোথাও গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। মানুষের স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার নেই। বিরোধী দলের বাক্‌স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণভাবে মিটিং মিছিল করা, এমনকি গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলার অধিকারও হরণ করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার পাঁয়তারা চলছে। তারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করে অনৈতিকভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন। সর্বস্তরে দুর্নীতি ও অনিয়ম দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে সবাইকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে-এমন মন্তব্য করে আহমেদ কামাল বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী আদর্শের নেতা-কর্মীসহ আপামর মেহনতি মানুষ, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, সবাইকে একসঙ্গে মিলে শহীদ জিয়ার মূল আদর্শ ও নীতিকে আবার জনগণের মাঝে ফিরিয়ে আনতে হবে।’ অনুষ্ঠানে আহমেদ কামালের বক্তব্যের পরপরই ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া, প্রেসিডেন্ট জিয়া, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ‘আহমেদ কামাল ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়া হয়। অবশ্য পরে কয়েকজন সাংবাদিককে আহমেদ কামাল বলেন, ‘আমি যা বলেছি লিখিত বলেছি, সেটাই আমার বক্তব্য।’ তবে তার ওই লিখিত বক্তব্যে কোনো নতুন দল গঠনের কথা নেই। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক এস ইসলাম ডনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ‘সংস্কারপন্থি’ নেতা হিসেবে পরিচিত বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক হুইপ আশরাফ হোসেন, বিএনপির মুখপত্র ‘দৈনিক দিনকাল’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী সিরাজ, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হোসনে আরা আহসান, বাংলাদেশ জাতীয় জোটের (বিএনএ) মুখপাত্র ও জোটভুক্ত বাংলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শেখ শহীদুজ্জামান, ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)ভুক্ত জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির মহাসচিব মিজানুর রহমান মিজু, কলামনিস্ট আবু মহিন মুসা, অধ্যাপক মাহবুব হাসান, অধ্যাপক এমএম ইসলাম, এনামুল হক আখন্দ প্রমুখ। তবে অনুষ্ঠানে বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী ছিলেন না। গত বছরের ৪ মে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন আহমেদ কামাল।

No comments: