রাজনীতি

[রাজনীতি][twocolumns]

আন্তর্জাতিক

[আন্তর্জাতিক][bleft]

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

[বিজ্ঞান-প্রযুক্তি][bsummary]

বাহাত্তরে ফেরার ১৬শ সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জের রায় ৫ মে

ঢাকা: বাহাত্তরে ফেরার লক্ষ্যে সংবিধানের যে ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছিল তা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ। রায়ের জন্য আগামী ৫ মে দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এদিন রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ ব্যাপারে পরে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, আদালত থেকে সামরিক ফরমানের মাধ্যমে সংবিধানে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছিল সেগুলো বাতিল করে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়াই ছিল পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনীর মূল উদ্দেশ্য। বৃস্পতিবার ‍দুপুরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, এই সংশোধনী কার্যকর করতে যে আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন তা এখনো হয়নি। তাই আইন হওয়ার আগেই এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার এখনো সময় হয়নি। শুনানিতে এই বিষয়গুলোই যুক্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। মাহবুবে আলম বলেন, শুনানিতে আমরা বলেছি ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণীত হয়েছিল জনগণের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। যার ভিত্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ও এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। অথচ সেই সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়েছিল সামরিক ফরমানের মাধ্যমে। যা সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছিল। সেই কলঙ্ক থেকে সংবিধানকে মুক্ত করার জন্যই পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছে বলে আমরা উল্লেখ করেছি। এছাড়া, সংশোধনী এখনো কার্যকর হয়নি। তিনি বলেন, সেই আইন পাস হলেই কেবল তখন বুঝা যাবে এতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু আছে কি না। তখন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু আইনে থাকলে মামলার কারণের উদ্ভব ঘটবে। তাই এই আইন পাস হওয়ার আগে মামলা দায়েরের কোনো কারণ উদ্ভব হয়নি। তাই এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট ইমরান কাওসার, অ্যাডভোকেট মাসুম আলীম, অ্যাডভোকেট এখলাসউদ্দিন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট মো. সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম বাবুল, অ্যাডভোকেট শাহীন আরা লাইলি ও অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ এ রিট আবেদনটি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে দিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। এই আদেশের পরে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ায় এ রিট করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিচারপতিদের অপসারণে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল ছিল। এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না। তারপরও সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে এ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী বাতিলের রায়ে ৯৬ অনুচ্ছেদ সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এদিকে আদালত থেকে বেরিয়ে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদরে বলেন, এ সংশোধনীতে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আদালতকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এ সংশোধনী করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার পরিবর্তন করা হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ৩২৭ জন সংসদ সদস্যের বিভক্তি ভোটের মাধ্যমে পাস হয় ষোড়শ সংবিধান সংশোধন বিল-২০১৪।  এ বিল পাসের মধ্য দিয়ে বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ২২ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিলে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এর মাধ্যমে এ সংশোধনীটি আইনে পরিণত হয় এবং সেদিনই গেজেট প্রকাশ করা হয়।

No comments: